স্বাস্থ্যসেবায় জিপিএস ট্র্যাকারের গুরুত্ব কতটুকু?
রোগী ও পণ্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাই জিপিএস ট্র্যাকারের কোন বিকল্প নেই। সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণঃ এম্বুলেন্সে জিপিএস ট্র্যাকার ইনস্টল করা থাকলে রোগী কখন নাগাদ হাসপাতালে এসে পৌঁছবে তা খুব সহজেই অনুমান করা যাবে। এর উপর ভিত্তি করে হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।
ফ্লিট ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোরও জরুরি সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব সহজ হচ্ছে। ঔষধ ও অন্যান্য পণ্যবাহী গাড়িগুলো নির্দিষ্ট সময়ে মেডিকেল স্টোর ও কোম্পানিতে পৌঁছচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একমাত্র গাড়িতে জিপিএস ট্র্যাকার ইনস্টল করা থাকলেই গাড়িগুলো কোথায় আছে জানা যায়। কোন কারনে দেরি করলেও তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়।
জিপিএস ট্র্যাকার কি?
গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) প্রযুক্তির মাধ্যমে গাড়িতে থাকা জিপিএস ট্র্যাকার গাড়ির অবস্থান সহ সব খবরাখবর স্যাটেলাইটের মাধ্যমে গাড়ির মালিকের মোবাইল অ্যাপে পৌঁছে দেয়। জিপিএস ট্র্যাকার এর সাহায্যে গাড়ির রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং, ওভারস্পিড এলার্ট, রুট প্ল্যানিং, গতিবেগসহ সব ধরনের তথ্য সহজেই পাওয়া যায়।
জিপিএস-এর গুরুত্বপূর্ণ ৪ ব্যবহার
নজরদারিতে জিপিএস:
এমন অনেক সময় আছে যখন আমাদের জানতে হবে যে আমাদের পরিবারের সদস্যরা কে এবং কোথায় আছেন বা আমাদের সবার জন্য আমাদের অবস্থান উন্মুক্ত রাখতে হবে। লাইফ 360 নামে একটি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এই কাজটি খুব সহজেই করা যেতে পারে। অ্যান্ড্রয়েড ছাড়াও, এই অ্যাপগুলি iOS এবং উইন্ডোজ ফোনের জন্য উপলব্ধ। অ্যাপটি আপনাকে আপনার পরিবারের সকল সদস্যের সাথে একটি গ্রুপে রাখবে যেখানে এই গ্রুপের সকল সদস্যের অবস্থান সর্বদা শেয়ার করা হবে। অতএব, আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, এই অ্যাপটি আপনাকে জানাবে যে আপনার পরিবারের সদস্যরা কে এবং কোথায় আছেন। আরেকটি অনুরূপ অ্যাপ হল Glympse. এটি অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস এবং উইন্ডোজ ফোনের জন্য বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এই অ্যাপগুলির সাহায্যে আপনি যে কারও সাথে সংযোগ করতে পারেন এবং একে অপরের সাথে অবস্থান ভাগ করতে পারেন। এতে রিয়েল টাইমে অবস্থান ট্র্যাক করার সুবিধাও রয়েছে।
নিরাপত্তায় জিপিএস:
নিরাপত্তা নিয়ে যারা একটু বেশি চিন্তিত, তারা ব্যবহার করতে পারেন বিসেফ (bsafe) নামের অ্যাপসটি। আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েডের জন্য বিনামূল্যে ব্যবহারের উপযোগী এই অ্যাপসে আপনি আপনার পছন্দমতো যতজন খুশি ততজনকে সঙ্গে নিয়ে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারবেন এবং নিজেদের মধ্যে লোকেশন শেয়ার করতে পারবেন। তবে এই অ্যাপসটির বড় বৈশিষ্ট্য হলো বিপদের সময় মাত্র একটি অ্যালার্ম বাটন চাপলেই এটি সতর্ক বার্তা ছড়িয়ে দেবে আপনার নেটওয়ার্কে থাকা সকলকে এবং আপনার অবস্থানটিও সকলকে জানিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, এটি সাইরেনের মতো শব্দও তৈরি করতে পারবে যদি আপনি চান। আবার ঠিক ওই সময়ে ফোনের পরিপার্শ্বের কথাবার্তা এবং ভিডিও ধারণ করে অ্যাপসটি জমা রাখবে বিসেফ অ্যাপসের সার্ভারে। পরে কোনো ধরনের প্রমাণ লাগলে সেগুলো আপনি সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।
শিশুর জন্য জিপিএস:
আপনার সন্তানকে হয়ত চোখে চোখে রাখা সম্ভব হবে না, কিন্তু প্রযুক্তির এই যুগে এসে জিপিএসের মাধ্যমে তার অবস্থানকে ঠিকই চোখে চোখে রাখতে পারবেন। জিপিএস সমর্থিত যেকোনো স্মার্টফোনে জিপিএস ট্র্যাকিং প্রো (GPS Tracking Pro) অ্যাপস ব্যবহার করেই সেটা করা সম্ভব। তবে সন্তানের হাতে স্মার্টফোন না দেখতে চাইলে সেক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন ট্র্যাকআইডি’র মতো জিপিএস ট্র্যাকার। ট্র্যাকারটি সন্তানের স্কুল ব্যাগে কিংবা জামা-কাপড়ের কোথাও লাগিয়ে রাখলে যেকোনো ওয়েব ব্রাউজার থেকেই তার গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারবেন।
হারিয়ে যাওয়া ডিভাইসের সন্ধানে জিপিএস:
প্রতিদিনের ব্যবহারে অনেক কিছুই আমরা হারিয়ে ফেলি। ঘরের চাবি থেকে শুরু করে চশমা, হাতঘড়ির মতো জিনিসগুলো যেন একটু বেশি বেশিই হারিয়ে যায়। তখন এগুলো খুঁজে বের করাটা একটা ঝক্কির ব্যাপার। তবে এই কাজেই আপনাকে সাহায্য করতে পারে জিপিএস প্রযুক্তি। জিপিএস ব্যবহার করে এখন অনেক ব্লুটুথ ট্যাগ তৈরি হয়েছে যেগুলো যেকোনো কিছুর সঙ্গেই লাগিয়ে দেওয়া যায়। আর তারপর সেই ব্লুটুথ ট্যাগটি থেকেই আপনি ওই বস্তুটিকে সবসময় ট্র্যাক করতে পারবেন। এই ধরনের ট্যাগ রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। এগুলোর বেশিরভাগের জন্যই রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস অ্যাপ্লিকেশন যেসব অ্যাপ্লিকেশন থেকেই ট্যাগ লাগানো বস্তুর বাস্তব অবস্থানকে সঠিকভাবে জেনে নেওয়া যায়।